ঢাকায় ব্যবসায়ী হত্যা; রাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০২৫, ২৩:৫৪

Thumbnail
ছবি: দ্যা ঢাকা ডায়েরি।

রাজধানীর মিডফোর্ড এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় যুবদল নেতার হাতে ব্যবসায়ী সোহাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবিলম্বে এই হত্যার বিচার এবং দেশব্যাপী চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানান।

শুক্রবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেন,

‘রাস্তাঘাটে মানুষ মারে ইন্টেরিম কী করে’,

‘এক দুই তিন চার, চাঁদাবাজ দেশ ছাড়’,

‘রক্তে ভেজা আমার ভাই, খুনি তর রেহায় নাই’,

‘চাঁদাবাজের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’,

‘লীগ গেছে পথে, দল যাবে সেই পথে’—ইত্যাদি।

সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে বাংলাদেশ নৃশংসতার সাক্ষী হয়েছে। এসব সন্ত্রাসের নেপথ্যে রয়েছে বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনগুলো। এখন সময় এসেছে দল ধরে সমালোচনার। আমরা আর নিরপেক্ষতার মুখোশে চুপ থাকবো না।”

তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা যদি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, তবে গদি ছাড়ুন। জনগণই ঠিক করবে কে নেতৃত্ব দেবে।”

আরেক সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, “ক্যাম্পাসে লেজুরবৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি হলেও তা আমরা এখনো বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এই ১২ মাসে একটি রাজনৈতিক দল খুনের সেঞ্চুরি করেছে। আমরা আর নিরব থাকতে পারি না।”

তিনি আরও বলেন, “যেভাবে ঢাকায় এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে, সেভাবেই হত্যাকারীদের প্রকাশ্যে শাস্তি দিতে হবে। তালবাহানা চলবে না।”

তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে ফাহিম রেজা বলেন, “আপনার দলের খুন ও চাঁদাবাজি করা সন্ত্রাসীদের যদি আপনি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারেন, মামলা না করেন, তবে আমরা ধরে নেব এসব কর্মকাণ্ডে আপনারই সম্মতি রয়েছে।”

সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডে প্রশাসনের যেমন সংস্কার প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন গণমাধ্যম সংস্কারেরও। ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর মিডিয়ায় সংবাদ আসা অত্যন্ত দুঃখজনক। মিডিয়ার যথাসময়ে প্রতিক্রিয়া থাকলে হয়তো আমাদের বিচার চাওয়ার সুযোগটা দ্রুত হতো।”

তিনি আরও বলেন, “একজন ব্যবসায়ীকে মাত্র কয়েক হাজার টাকার জন্য নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভাবা দরকার, যদি এরা ক্ষমতায় আসে তাহলে জুলাই বিপ্লবের সৈনিকরাই একদিন তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে। তখন তারাও আমাদের ছাড়বে না।”

প্রসঙ্গত, গত ৯ জুলাই ঢাকার মিডফোর্ড এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় যুবদল নেতার হাতে সোহাগ নামের এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হত্যাকারী সোহাগের নিথর দেহের ওপর লাফিয়ে চলেছে—যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

টিডিডি /এইচটি।