চবিতে আন্দোলনের মুখে হত্যাচেষ্টার আসামির পদোন্নতি বোর্ড প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯:৪৩

Thumbnail
বোর্ড বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আদোলন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিতর্কিত শিক্ষক ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কুশল বরণ চক্রবর্ত্তীর পদন্নোতি নিয়ে ছুটির দিনে বোর্ড বসিয়েছিল চবি কতৃপক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যদ্বয়। ফলে তীব্র আন্দোলনের মুখে পদোন্নতি বোর্ড প্রত্যাহার করে নেয় প্রশাসন ।

Media Image অভিযুক্ত শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী

শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুর আড়াইটা থেকে ক্ষোভ জানিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সাড়ে তিনটা থেকে প্রায় দুই ঘন্টা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে রাখেন তারা। পরবর্তীতে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তীব্র আন্দোলনের মুখে ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে কিছু সংবেদনশীল নিউজের প্রেক্ষিতে পদোন্নতি বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়।

আন্দোলন চলাকালে ‘বাহ ভিসি চমৎকার, স্বৈরাচারের পাহারাদার; ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর' স্লোগান দিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।

আন্দোলন শেষে ইতিহাস বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাহসান হাবীব বলেন,  “হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী এ শিক্ষকের আজকে প্রমোশন বোর্ড বসায় আমরা ভিসি বরাবর দাবী জানাই এটা প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ সে স্বদেশ বিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত ছিল এবং আছে। তার উপর সে আওয়ামী লীগের দোসর। প্রশাসন আমাদের কাছে কিছু সময় নেয় এবং আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাই। আন্দোলন পরবর্তী সময় প্রশাসন আমাদের জানায় যে তার প্রমোশন বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে।”

অভিযুক্ত শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী এ বিষয়ে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে, তা মিথ্যা। ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম।”

কুশল বরণ চক্রবর্ত্তীর বোর্ডের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “কুশল বরণের বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে। সংবাদ পত্রে তার বিষয়ে কিছু সংবেদনশীল নিউজ হয়েছে। এজন্য বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে।”

জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি যে একটা হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে তাকে। এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এখানে এসে উপাচার্যের অফিস ঘেরাও করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিয়ে তার বোর্ডটা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।”

বোর্ডের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাউকে কোর্টের মতো বিচার করতে পারে না। আমরা কারো জেল জরিমানা করতে পারি না। এটা আমাদের এখতিয়ারে নেই। তবে আমরা যে কমিটিগুলো করেছি সেগুলো ধীরে কাজ করছে।

জানা যায়, গতবছর ২৬ নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের কর্মী এনামুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীদের হামলার শিকার হন। এ সময়ে তিনি কিরিচের কোপে মাথায় গুরুতর জখম হন এবং তার ডান হাত ভেঙে যায়। এ ঘটনায় বাদী হয়ে তিনি গত ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নামে মামলার আবেদন করেন। এই মামলার ২০তম আসামী কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী।