১১ হাজার শিক্ষার্থীর জাককানইবি’তেি একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। এছাড়াও শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী মিলে রয়েছেন প্রায় ৬শ জন। তবে বিশাল এই জনগোষ্ঠির জন্য রয়েছে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স।
অ্যাম্বুলেন্স সংকটের কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাইকে প্রতিনিয়তই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিকেল সেন্টার "ব্যথার দান" প্রাথমিক চিকিৎসা দিতেও অপারগ। ফলে যেকোনো সমস্যার জন্যই যেতে হয় ত্রিশাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিংবা ময়মনসিংহ সদর হাসপাতালে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ময়মনসিংহ সদর হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। এছাড়াও আগের চেয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এমন অবস্থায় একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্সে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। নানা সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আশ্বাস দিলেও বাস্তবে এর প্রতিফলন না ঘটায় চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের।
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আহমেদ ওমর ফারুক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১১ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স পর্যাপ্ত নয়। অন্তত দুইটি অ্যাম্বুলেন্স ও প্রতিটিতে দু’জন ড্রাইভার থাকা দরকার। বর্তমান অ্যাম্বুলেন্সের অবস্থাও ভালো নয়, অক্সিজেন সরঞ্জাম সঠিকভাবে কাজ করে না। তাই দ্রুত নতুন অ্যাম্বুলেন্স সংযোজন জরুরি।”
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী রিফাইয়া ইসলাম সুচনা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকায় জরুরি সেবায় দেরি হয় এবং মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। ১০–১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য এটি অপ্রতুল। এছাড়াও রাতে হলে কোন মেয়ে শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে যথাসময়ে সার্ভিস পাওয়া যায় না।”
তিনি আরো বলেন, “অন্তত ২–৩টি পূর্ণাঙ্গ অ্যাম্বুলেন্স, নিয়মিত পরিদর্শন, ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন ও দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।”
পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, যা জরুরি সময়ে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে রাতে কেউ অসুস্থ হলে সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স না আসায় রোগীকে নিজের উদ্যোগে বাইরে নিতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই দ্রুত অতিরিক্ত অ্যাম্বুলেন্স সংযোজন এবং ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি, যাতে কোনো প্রাণ ঝুঁকির মুখে না পড়ে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আশরাফুল আলম জানান, “শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় আ্যম্বুলেন্স সার্ভিস গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা আ্যম্বুলেন্স রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি সেবা নিশ্চিত করতে পারছে না, প্রয়োজন একাধিক অ্যাম্বুলেন্স। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট স্বল্পতার কারনে নতুন অ্যাম্বুলেন্স নিতে পারছে না। তবে অন্য ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে, আশা করি দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “একটি আ্যম্বুলেন্স একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে ( ইউজিসি) বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করার পরেও পদক্ষেপ নেয়নি। বর্তমানে আমরা কর্পোরেট সোস্যাইল রেসপনসেবলিটি ( সিএসআর) থেকে একটা অ্যাম্বুলেন্স নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেছি। নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স আসলে আশা করি সংকট কিছুটা হলেও নিরসন হবে।
টিডিডি/এসআর