ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ; পুলিশের সামনে ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে
প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৫, ১১:২২

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় এক কলেজছাত্রীকে চুলটেনে ও লাথি মেরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের দুজন পুলিশের উপস্থিতিতেই থাকে মারধর করা হয় বলে জানান তিনি।
অভিযোগকারী ছাত্রী বৈশাখী আক্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ইভটিজিংয়ের ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
জিডিতে বৈশাখী উল্লেখ করেন, তার ছোট বোন চৈতি আক্তার (১৫) স্থানীয় ফুলসুতি আব্দুল আলেম চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রতিবেশী শরীফ বেপারী (২১) ও তার কিছু সহযোগী চৈতির চলাফেরার পথে অশালীন অঙ্গভঙ্গি ও মন্তব্য করে আসছিল। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শরীফকে সতর্ক করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।
গত ২৯ মে বিকেলে চৈতি যখন বাড়ির কাছাকাছি রাস্তায় ছিলেন, তখন আবারো শরীফ তাকে উত্ত্যক্ত করে। চৈতি বাড়িতে ফিরে ঘটনাটি বড় বোনসহ পরিবারের সদস্যদের জানায়। পরে বৈশাখী থানায় অভিযোগ করেন।
পরদিন ৩০ মে বিকেলে নিজ গ্রাম ভাবুকদিয়ায় রাস্তার পাশে তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন বৈশাখী। তার দাবি, স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা তার চুল ধরে টেনে এবং লাথি মেরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
ঘটনার পর সন্ধ্যায় তিনি নিজের ফেসবুক আইডি ‘বৈশাখী ইসলাম বর্ষা’ থেকে দুটি লাইভ (১ মিনিট ৯ সেকেন্ড ও ২৭ সেকেন্ড) ও এক ভিডিও বার্তায় ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, ‘আমি বৈশাখী ইসলাম। আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। আমি একটা ইভটিজিংয়ের কেস নিয়ে প্রতিবাদ করাতে বিএনপির লোকজন আমাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কি জুলাই আন্দোলন করা ভুল ছিল, যার কারণে রাস্তায় ফেলে বিএনপির লোকজন আমাকে মারছে। তারা আমাকে, একজন মেয়ে বলে, ইচ্ছামতো চুল ধরে টেনে লাথি মেরেছে। আমার বাবাকে খুঁজছে মারার জন্য। আমি খুব বাজে অবস্থায় আছি। আমি কী করব, বুঝতে পারছি না।’
অন্য এক ভিডিও বার্তায় বৈশাখী বলেন, প্রশাসনের দুজন পুলিশের উপস্তিতিতেই আমাকে মারা হয়। তারা (হামলাকারী) বলেছে আন্দোলন করে কি করবি? সমন্বয়ক এলাকায় চলবে না। তারা বলেছে আমাদেরকে একঘরে করে দিবে। আমরা কেন তাদের কাছে না গিয়ে থানায় অভিযোগ করেছি। মূলত এজন্যই এসবকিছু করেছে।
নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গণমাধ্যমকে বলেন, এটি ভাবুকদিয়া গ্রামে দুই পরিবারের অভ্যন্তরীণ ঘটনা। এর সঙ্গে বিএনপি কিংবা রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
নগরকান্দার ইউএনও মো. কাফী বিন কাদির বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান।