
শারদীয় দুর্গোৎসবকে সম্মান জানিয়ে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত আট দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়িতে চলমান অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছে জুম্ম ছাত্র জনতা।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১১টা থেকে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে এক স্কুলপড়ুয়া কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তারা ধারাবাহিকভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি এবং ২৮ সেপ্টেম্বর গুইমারায় অবরোধ চলাকালে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত এবং অন্তত ১৬ জন আহত হন। এ সময় হামলাকারীরা বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায় বলেও অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ২৯ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত এক সভায় জুম্ম ছাত্র জনতার ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রশাসনের কাছে আট দফা দাবি তুলে ধরে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয় এবং জানানো হয়, অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে জারিকৃত ১৪৪ ধারাও প্রত্যাহার করা হবে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গুইমারা হামলার তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েলসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুইমারার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। জুম্ম ছাত্র জনতার সমন্বয়ক এবং বিএমএসসির ছাত্রনেতা উক্যনু মারমা বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ন্যায়বিচার আদায় করা।’
তবে সংগঠনটি সতর্ক করে দিয়েছে, প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আট দফা দাবি সময়মতো বাস্তবায়ন না হলে পুনরায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।