ঢাবিতে ‘অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা টেমপ্লেট’ উদ্বোধন

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২৫, ২০:০৫

Thumbnail
ছবি: সংগৃহীত
গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান রামরু ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-এর সদস্যভুক্ত দেশসমূহের জন্য একটি ‘অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা টেমপ্লেট’ (Internal DisplacementManagement Template) প্রণয়ন করেছে। সোমবার (২৩ জুন) সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনস্থ অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এই টেমপ্লেটের উদ্বোধন করা হয়। 
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই টেমপ্লেটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
 
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বৈষম্য নিরসন ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় জাতীয় পর্যায়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দীর্ঘদিনের নিষ্ক্রিয়তার কারণে আমাদের বেশ কিছু সমস্যা সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিস্থিতির কারণে দেশের একটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে দরিদ্র জনগণ ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এসব অসহায়, দরিদ্র, নিঃস্ব ও বাস্তুহারা মানুষের সুরক্ষা প্রদান সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। আন্তঃসংস্থা সমন্বয়ের মাধ্যমে বর্তমান সরকার এসব সংকট নিরসনে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 
 
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি এবং এর কার্যকর ব্যবস্থাপনা বর্তমান সময়ের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের মানুষ এই সংকটের ভয়াবহতা বারবার প্রত্যক্ষ করেছে। বিভিন্ন রকমের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন এদেশের মানুষের নিত্যদিনের বাস্তবতা। এই বাস্তবতা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি দেশ এই সংকটের সম্মুখীন। এই প্রেক্ষাপটে রামরু যে টেমপ্লেট প্রণয়ন করেছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী, প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। 
 
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, এই টেমপ্লেটের ব্যবহারিক উপযোগিতা রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত কারণে বাস্তুহারা মানুষদের পুনবার্সনের ক্ষেত্রে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি যথেষ্ট বিস্তৃত, আন্তর্জাতিক কাঠামো প্রদানের জন্য উপযুক্ত এবং একটি অনুশীলনমূলক ডকুমেন্ট। 
 
তিনি আরও বলেন, সমন্বিত কাজ ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে পরিচালিত যে কোন গবেষণাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই টেমপ্লেট তৈরিতেও সেটি অনুসরণ করা হয়েছে। এজন্য এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং সময়ের সঙ্গে এটি হালনাগাদ করা সম্ভব। এই টেমপ্লেট নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহ বৃহত্তর পরিসরে কাজ করলে দেশের মানুষ অনেক উপকৃত হবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
 
এছাড়াও ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর ঢাকাস্থ চিফ অফ মিশন মি. ল্যান্সি বননু অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 
 
রামরু’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। রামরু’র গবেষণা ফেলো ইখতেখারুল ইসলাম ‘টেমপ্লেট’-এর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
 
উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি, মানবাধিকার, জীবিকা নির্ভর অভিবাসন, নগরায়ণসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণাধর্মী নথি হিসেবে রামরু এই ডিসপ্লেসমেন্ট ম্যানেজমেন্ট টেমপ্লেট প্রণয়ন করেছে। এটি সম্প্রতি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
 
টিডিডি/ এএইচআর