চবিতে ‘পুষ্পা’ সিনেমা স্টাইলে অবৈধভাবে গাছ পাচার, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২৫, ১৬:১১

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ’পুষ্পা’ সিনেমা স্টাইলে পাহাড়ি স্রোত ব্যবহার করে অবৈধ পথে গাছ পাচারের সময় জব্দ করে প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করলে নিরাপত্তা কর্মী পাঠিয়ে গাছগুলো জব্দ করা হয়।
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে ক্যাম্পাসের স্লুইস গেইট এলাকায় গাছের গুড়িগুলো জব্দ করা হয়।
জানা যায়, স্থানীয় বন বিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ঝুপড়ির পেছনের জঙ্গল থেকে কাটা গাছগুলো অভিনব কায়দায় ঝিরিপথ ব্যবহার করে সেগুলো জঙ্গল থেকে বের করা হয়। তবে গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের ঝিরিপথ ও স্লুইস গেট দিয়ে পরিবহনের সময় গাছগুলো জব্দ করা হয়।
এভাবে অনুমতি ও ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে ঝিরিপথে ভাসিয়ে নেওয়া জব্দ করা গাছের মালিক দাবি করা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে গাছ পাচারেরও অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে গাছ ক্রয় করার দাবি করলেও কোনো ধরনের প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
আলীর বক্তব্য অনুসারে মালিকানাধীন যে জায়গা থেকে গাছ কাটা হয়েছে সে জায়গার খতিয়ানে মালিকের নামও দেখাতে পারেননি তিনি। আইনানুসারে মালিকানাধীন জায়গা থেকে অধিক গাছ কাটার জন্য স্থানীয় বন বিভাগ থেকে যে অনুমতি নিতে হয় তাও নেওয়া হয়নি বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
অভিযুক্ত গাছ ব্যবসায়ী আলীর দাবি, তিনি মালিকানাধীন জমি থেকে শতাধিক গাছ ক্রয় করে সেগুলো চারমাস আগে কেটে রেখেছেন। বর্ষা মৌসুমে শ্রমিক খরচ বাঁচাতে ঝিরিপথে গাছগুলো ভাসিয়ে দেন। কাটা গাছ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্লুইসগেট সংলগ্ন ঝিরিপথ ব্যবহার করতে অনুমতি নেওয়া ছাড়া এই পথটি ব্যবহার অবৈধ সে ব্যাপারে অবগত ছিলেন না বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরই এভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ পাচার করার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝিরিপথ ব্যবহার করে কয়েকটি চক্র। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বনাঞ্চলের গাছও অবৈধভাবে কেটে পাচার করতো এসব সংঘবদ্ধ চক্র। তখন থেকেই এই ঝিরিপথ অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বৈধভাবে গাছ কাটা ও পরিবহনে কোনো নিয়মকানুন না মানার কারণে গাছ পাচারের সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাকি সরকারি জায়গা থেকে কাটা হয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে আগামী রোববার গাছ কাটার স্পট ভিজিট করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী বলেন, গত বুধবার বিকেল তিনটার পরে স্লুইস গেট এলাকায় কাটা গাছ ভেসে আসার খবর পাওয়ার সাথে সাথেই সেখানে নিরাপত্তা কর্মী পাঠিয়ে গাছগুলো জব্দ করা হয়। ৪৯টি গাছের গুড়ি জব্দ হয়েছে। এর আগেও এখান দিয়ে বেশকিছু গাছের গুঁড়ি ভাসিয়ে নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, গাছ ভেসে আসার খবর পেয়ে প্রাথমিকভাবে গাছগুলো জব্দ করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি মিটিং হয়েছে। বন বিভাগকে অবগত করার জন্য অফিশিয়াল চিঠি দেওয়া হবে। পরবর্তীতে যে জায়গা থেকে গাছ কাটা হয়েছে সে জায়গা ঘুরে দেখা হবে।