১১ জুলাই পুলিশি বাধা ডিঙিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

সাগর শুভ্র

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০২৫, ১৩:০৪

Thumbnail
ছবি: পুলিশি বাধার সম্মুখে শিক্ষার্থীরা

২০২৪ সালের জুলাইয়ে চাকরিতে সকল ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রাজপথে নামে ছাত্রসমাজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সূচিত এই আন্দোলন অল্প সময়ের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে  সারাদেশে। যার পরিণতিতে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন ঘটে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের। ১১জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ঘোষিত বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করতে যায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

মূল ফটকে আসা মাত্রই পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সাথে দস্তাদস্তির পর লাঠিচার্জ করে।  এতে কয়েকজন আহত হন। পরবর্তীতে পুলিশের বাধা অতিক্রম করেই মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষাথীর্রা। এসময় ব্লকেড কর্মসূীচতে যোগ দেয় অন্যান্য ছাত্র-জনতা।  

স্মৃতিচারণ করে আন্দোলকারী শিক্ষার্থী মুমিনুর রশিদ শুভ বলেন, সেদিন পুলিশ প্রথমবারের মতো শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালিয়েছিল। আমরা আগেই জানতাম আমাদের উপর হামলা হতে পারে। তবুও আমরা দমে যাইনি। আমাদের মাথায় ছিল যেভাবেই হউক আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে। সেদিন অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী পুলিশকে মোকাবিলা করে মহাসড়ক দখলে নিয়েছিলাম।  

তিনি আরো বলেন, পুলিশ আন্দোলনকে দমন করতে আমাদের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়েছিল। সেদিনের পরিস্থিতি ছিল আগের চেয়ে অনেক বেশী উত্তপ্ত। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ভন্ডুল করতে পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট টিম, বিভিন্ন পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিল। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহ-সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাহাত হোসেন বলেন, পুলিশি আক্রমণের আশঙ্কায় অনেকেই দ্বিধায় ছিলেন যে রাস্তা অবরোধ করা যাবে কি-না। কিন্তু আমি এবং শাবিপ্রবির সমন্বয়ক আজাদ শিকদার স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেই, যত বাধাই আসুক, আমরা 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি সফল করবোই।

তিনি আরও জানান, আমার কয়েকজন বন্ধু ও জুনিয়র এসে বলেছিল—রাস্তায় না নামলে আন্দোলন সফল হবে না। রোড আমাদের ব্লক করতেই হবে। সেই প্রত্যয় থেকেই আমরা সামনে এগিয়ে যাই।

সেদিনের স্মৃতিচারণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ফয়সাল হোসাইন বলেন, সেদিন পুলিশ কোনভাবে আমাদের সড়কে উঠতে দিতে চায়নি। আমরা মাত্র বিশ থেকে ত্রিশ জন আন্দোলনকারী ছিলাম। সেদিন আমরা পুলিশের লাঠিচার্জ ও বাধা অতিক্রম করে রাস্তা অবরোধ করেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, পুলিশের লাঠিচার্জে আমাদের প্রায় পাঁচ থেকে সাতজন সহযোদ্ধা আহত হয়। প্রথম পুলিশ আমাদের উপর লঠিচার্জ ও বাধা প্রদান শুরু করে। এরপর থেকে স্বেরাচারী সরকারের পতন পর্যন্ত আমাদের পুলিশকে মোকবেলা করেই আন্দোলন সফল করতে হয়েছে। 

টিডিডি/বিইউ