সেনা অফিসার হওয়া হলো না, ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ শিশু জাবির

প্রকাশিত: ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৭:০৫

Thumbnail
শহীদ জাবির ইব্রাহীম (ছবি: সংগৃহীত)

বয়স মাত্র ছয়। সবেমাত্র স্কুলে যাওয়া শুরু করেছেন। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে সেনা অফিসার হওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না—ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় কেসি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নার্সারি শ্রেণির ছাত্র জাবির ইব্রাহিম।

গত ৫ আগস্ট বিকেলে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবরে উত্তরা সেক্টর-৪–এ পরিবারের সাথে বিজয় মিছিল দেখতে গিয়েছিলো জাবির। সেদিন পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে একটি গুলি এসে লাগে জাবিরের উরুতে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জাবির। এরপর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

Media Image শহীদ জাবির ইব্রাহীম (ছবি: সংগৃহীত)

২০১৮ সালের ১৯ মে ঢাকার দক্ষিণখান থানার পশ্চিম মোল্লারটেক এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান জাবির ইব্রাহিম। পিতা কবির হোসাইন বেসরকারি মোবাইল রিটেইলার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং মাতা রোকেয়া বেগম গৃহিণী। বড় বোন জুমাইনা কবির নেহা আকিজ ফাউন্ডেশনে এইচএসসি শেষ করেছেন এবং বড় ভাই জুহায়ের মাহতাব আব্দুল্লাহ একই স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

শান্ত ও সৎ স্বভাবের জাবির খেলনার পরিবর্তে রিসাইকেল করা জিনিস দিয়ে খেলতেই বেশি পছন্দ করত। ছোট থেকেই আর্মি অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখতো সে।

পরিবারের ভাষ্যমতে, ওইদিন শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিজয় মিছিল শুরু হয়। উত্তরা জসীমউদ্দীন সড়কে এক বিজয় মিছিল দেখতে যান জাবিরের মা,বাবা ও চাচা। শিশু জাবিরের একগুঁয়েমির কারণে তাকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে বাধ্য হন মা। বিকেল সাড়ে চারটায় এপিবিএন অফিস সংলগ্ন বাইতুস সালাম মাদ্রাসার গেটের সামনে মিছিল লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি ছুড়লে একটি গুলি এসে জাবিরের উরুতে লাগে।মুহূর্তেই রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জাবির। বাবা কোলে করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকেরা রক্ত সংগ্রহ করতে বলেছিলেন। রক্ত সংগ্রহ করা গেলেও প্রয়োজনীয় 'ক্রস ম্যাচ' করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশু জাবির। সেদিন রাতেই শহীদ তাকে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের কবরস্থানে দাফন করা হয়।