দেশের ৫৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিতেও নেই নারী উপাচার্য
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৯

বর্তমানে দেশের ৫৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিতেও নেই কোনো নারী উপাচার্য। বিষয়টি উঠে এসেছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য পদের পুনর্বিন্যাস হয়। সে সময় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে একমাত্র নারী হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন। তবে নিয়োগের মাত্র আট মাসের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে সরকার পরিবর্তনের পর আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন তিন নারী উপাচার্য। তারা হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন।
জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট পদত্যাগ করেন, মাত্র তিন দিন আগেই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীরা তাঁকে ‘আওয়ামী ঘনিষ্ঠ’ আখ্যা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। রাঙামাটি ও পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়েও অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন সংশ্লিষ্ট নারী উপাচার্যরা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদসহ পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন, যদিও তাঁর বিরুদ্ধেও উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে এবং শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে।
তালিকায় আরও আছেন বুয়েটের অধ্যাপক খালেদা একরাম, যিনি দায়িত্বে থাকাকালেই ২০১৬ সালে মারা যান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিরীন আখতারকেও দায়িত্বকালীন সময়ে আন্দোলনের মুখে বিদায় নিতে হয় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে।
সার্বিকভাবে দেখা যাচ্ছে, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী নেতৃত্বের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ইতিহাসে মোট ছয়জন নারী ভিসি দায়িত্ব পালন করলেও, তাঁদের অধিকাংশকেই মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করতে হয়েছে বা অপসারণের শিকার হতে হয়েছে।