মাদক উদ্ধারে পুরস্কার পাওয়া এসআই এবার ‘মাদক পাচার’ করায় প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৩৭

Thumbnail
জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতুর কাছ থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন এসআই কামাল হোসেন

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার এসআই কামাল হোসেন চলতি বছরই মাদক উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় পুরস্কার পেয়েছিলেন। এবার নিজেই মাদক পাচার অভিযোগে প্রত্যাহার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে। লোহাগাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় এসআই কামাল হোসেনকে লোহাগাড়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি বাজার এলাকায় ৪৮ বোতল ফেনসিডিলসহ তিনজনকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে তাদের সেনাবাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ফেনসিডিল বহনের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়।

আটক তিনজন হলেন—চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সুখছড়ি এলাকার রমিজ উদ্দিন (৩৫), লোহাগাড়া সদরের হোসেন আলী মাতব্বর বাড়ির নাজিম উদ্দিন (৪৫), এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার তাজুল ইসলাম (৪৯)। আটক ব্যক্তিরা পুলিশের সোর্স বলে স্বীকার করেন।

তাদের একজন রমিজ উদ্দিন জানান, ‘আমরা পুলিশের সোর্স। ফেনসিডিলগুলো আমাদের দিয়েছে এসআই কামাল হোসেন। তিনি বলেন, এগুলো পার্বত্য জেলার লামার আজিজ নগরে পৌঁছে দিতে হবে।’ তিনি আরও দাবি করেন, এসআই কামাল তাদের পেছনে একটি আলাদা প্রাইভেটকারে অনুসরণ করছিলেন, যেখানে ইয়াবা ছিল। সামনের গাড়িটি আটক হওয়ার পর তিনি দ্রুত পেছনের গাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, মাদক উদ্ধারে সুনাম কুড়ানো লোহাগাড়া থানার কিছু সদস্য এর আগেও মাদক আদালতে জমা না দিয়ে পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার শিক্ষার্থীরা বিষয়টি যাচাইয়ের উদ্যোগ নেন। এরপর বিকেল ৪টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত টানা ৮ ঘণ্টা চুনতি বাজার এলাকায় অবস্থান করে তারা অভিযুক্তদের মাদকসহ আটক করেন।

উল্লেখ্য, এসআই কামাল হোসেন চলতি বছরের ২২ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ মাদক উদ্ধারকারী কর্মকর্তা হিসেবে জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতুর কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছিলেন। অথচ কয়েক মাসের ব্যবধানে তিনিই এখন মাদক পাচারের অভিযোগে প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা।